পরীক্ষায় কমন উপযোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু “বাগধারা”


বাংলা ভাষায় এমন কতকগুলো শব্দ বা বাক্যাংশ রয়েছে যেগুলো শাব্দিক অর্থ প্রকাশ করে না, বৈশিষ্ট্যময় কোনো ভাব প্রকাশ করে। এ জাতীয় শব্দ বা বাক্যাংশকে বাগ্ধারা বলে। বাগ্ধারা প্রয়োগ বা ব্যবহার জানা খুবই প্রয়োজন। কারণ, এগুলোর সঠিক ব্যবহারে ভাষা হয়ে ওঠে শ্রুতিমধুর, সৌন্দর্যসমৃদ্ধ সাবলীল ও গতিময়।

নিচের কতিপয় বাগ্ধারার ব্যবহার দেখানো হলো ঃ

হ’ সিরিয়াল

হালে পানি পাওয়া = (উতরিয়ে যাওয়া) এ সামান্য টাকায় হলে পানি পেলে হয়।

হাতে খড়ি = (শিক্ষার সূচনা) তানিয়ার আজ হাতে খড়ি হলো।

হাটে হাঁড়ি ভাঙ্গা = (গোপনীয়তা প্রকাশ)  তাড়াতাড়ি চলে আস, কথা বলো না, তাহলে হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে দেবো।

হাতটান =(চুরির অভ্যাস) মালেকের হাতটানের অভ্যাস এখনও গেল না।

হাড়ে হাড়ে চিনা = (মর্মান্তিকভাবে চিনা)  তুমি আজমলকে না চিনলেও আমি ওকে হাড়ে হাড়ে চিনি।

হাতে কলমে = (প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা)  হাতে কলমে শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা।

হাতের পাঁচ = (শেষ সম্বল)  হাতের পাঁচ এর ক’টি টাকা দিয়েই আমাকে মাসের বাকি দিন চলতে হবে।

হাত করা = (বশে রাখা)  নির্বাচনে জয়লাভ করতে হলে কলিম মাতুব্বরকে যে করেই হোক হাত করতে হবে।

ষ,স’ সিরিয়াল

ষোল আনা = (পুরোপুরি)  সারা বছর না পড়ে ষোল আনাই ভুল করেছি।

ষাঁড়ের গোবর = (অপদার্থ )ষাঁড়ের গোবর ছেলেটাকে নিয়ে হাই সাহেব বিপদে পড়েছেন।

সাত-সতেরো = (নানাবিধ)  আজ আর সাত-সতেরো বলে কাজ হবে না - আমি আমার পাওনা টাকা চাই।

সাত-পাঁচ ভাবা = (নানারকম চিন্তা) সাত-পাঁচ ভেবে শেষে আর নোমানকে কথাটা বলা হয় নি।

সোনায় সোহাগা = (সুন্দর মিল) যেমন বর, তেমনি কনে, এ যেন সোনায় সোহাগা।

সাক্ষী গোপাল = (ব্যক্তিত্বহীন, নিষ্ক্রিয়)  করিম সাক্ষী গোপল, কাজ চালায় মধু  জহির

সুখের পায়রা = (সুসময়ের বন্ধু)  আমার বন্ধুরা সব সুখের পায়রা, দুঃসময়ে কারো দেখা পাওয়া ভার।

সাত খুন মাফ = (গুরুতর অপরাধেও অব্যাহতি)  নোমানের মামা মন্ত্রি , তার সাত খুন মাফ।

সেয়ানে সেয়ানে = (যোগ্যে যোগ্যে)  এবার সেয়ানে সেয়ানে লড়াই, দেখা যাক কে হারে, কে জিতে।

সাপও মরে লাঠিও না ভাঙে = (বিনা ক্ষতিতে লাভ, বিনা খরচেই কার্যোদ্ধার) তাকে কৌশলে এমন শায়েস্তা করতে হবে যেন, সাপও মরে লাঠিও না ভাঙে।

সুখে থাকতে ভূতে কিলায় =  ( স্বেচ্ছায় দুঃখ বরণকারী)  চিন্তা ভাবনা না করেই রাশেদ ভালো চাকরিটা ছেড়ে দিল, আসলে সুখে থাকলে ভূতে কিলায়।

য,র,ল,শ’ সিরিয়াল

যক্ষের ধন = (কৃপণের ধন)  যক্ষের ধনের মতো সারাজীবন বিষয় সম্পত্তিতো আগলে রাখলে এবার কিছু দান-দক্ষিণা কর।

যম যন্ত্রণা = (মৃত্যু-যন্ত্রণা)  পুত্রের মৃত্যুতে মা-বাবা যম যন্ত্রণা ভোগ করছেন।

রাবণের চিতা = (চির অশান্তি)  অধিক জনসংখ্যায় রহিমের সংসারটা এখন রাবণের চিতায় পরিণত হয়েছে।

রাঘব বোয়াল = (অত্যন্ত লোভী ) দায়িত্বহীন ব্যক্তিরাই যদি রাঘব বোয়াল হয় তবে দেশের উন্নতি হবে কী করে।

রগচটা = ( যে একটুতেই রাগে)  রগচটা লোকের সাথে কাজ করে কোনো শান্তি নেই।

রুই-কাতলা =  (পদস্থ বা নেতৃস্থানীয়) লোক জনগণের টাকার সিংহভাগ রুই-কাতলাই ভোগ করছে।

লাটে ওঠা = (সর্বনাশ হওয়া ) যেভাবে বাকি দিতে শুরু করেছে ব্যবসা আর লাটে ওঠতে বাকি নেই।

লালবাতি জ্বালানো = (ধ্বংস হওয়া)  শেষ পর্যন্ত ব্যাংকটা লালবাতি জ্বালালো।

লেজে পা পড়া = (স্বার্থে আঘাত লাগা)  অনেক বন্ধুত্ব দেখছি, লেজে পা পড়ার পর দু’দিনও টেকে না।

শনির দৃষ্টি = (কু দৃষ্টি)  শনির দৃষ্টি না হলে এক মাসের মধ্যে কেন পালের সবগুলো গরু মারা যাবে।

শাঁখের করাত = (উভয় সঙ্কট)  সত্য বললে বাবা বিপদে পড়েন, আর মিথ্য বললে মা বিপদে পড়েন- আমি পড়েছি শাঁখের করাতে।

শাপে বর = (অকল্যাণ হতে কল্যাণ)  ম্যানেজার সাহেব নোমান শাস্তি না দিয়ে দিলেন প্রমোশন, একেই বলে শাপে বর।

শাক দিয়ে মাছ ঢাকা = (গুরুতর কলঙ্ক ঢাকার চেষ্টা)  সত্য কথা বলেছি বলে রুষ্ট হয়েছো - শাক দিয়ে মাছ আর কত দিন ঢাকবা?

ভ,ম’ সিরিয়াল

ভরাডুবি = (সর্বনাশ) দোকানে আগুন লেগে রহিম মিঞার ভরাডুবি হয়েছে।

ভূতের বেগার খাটা = (বৃথা পরিশ্রম করা) সংসারে ভূতের বেগার খেটে খেটে জীবনটা গেল, ফল কিছুই হলো না।

ভূঁইফোড় = (নতুন, অর্বচীন)  ভূঁইফোড় বড় লোকদের অহঙ্কারের শেষ নেই।

ভিজা বিড়াল = (নিরীহ অথচ কপটচার) লোকটা সদারপী কিন্তু আসলে ভিজা বিড়াল।

ভিটায় ঘুঘু চরানো = (সর্বনাশ) মিজান সাহেব  ভোটে ফেল করে আতর আলীর বাড়িতে ঘুঘু চড়ালেন।

ভাতে মারা = (না খাইযে কষ্ট দেওয়া)  কাজের ঝিকে অনেকেই হাতে না মেরে ভাতে মারে।

মণিকাঞ্চন যোগ = (উপযুক্ত মিলন)  যেমন বর তেমনি কনে, যাকে বলে মণিকাঞ্চন যোগ।

মাটির মানুষ = (সরল প্রকৃতির) তারেক সাহেব একজন মাটির মানুষ, সচারাচর এমন লোক দেখা যায় না।

মাছের মার পুত্রশোক = (কপট বেদনাবোধ) ভোটের আগে চিহ্নিত অসাধু ব্যক্তিরা জনগণের জন্যে দরদ দেখাচ্ছে - এ যেন মাছের মার পুত্রশোক।

মগের মুল্লুক = (অরাজকতা, জুলুমের রাজত্ব)  সন্ত্রাসীরা দেশটাকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে।

মানিক জোড় = (পরম বন্ধু) কণা আর মণির মধ্যে মানিক জোড় সম্পর্ক।

মুখে চুনকালি দেওয়া = (কলঙ্ক দেওয়া)  দুশ্চরিত্র ছেলেটা বংশের মুখে চুনকালি দিয়েছে।

মিছরির ছুরি = (মিষ্টি কথায় অনেক আঘাত) তার কথা মিছরির ছুরির মতো এখনো আমাকে যন্ত্রণা দেয়।

প,ফ,ব’ সিরিয়াল

পটল তোলা = (মরা)  নৌকাডুবীতে অনেকেই পটল তুলেছে।

পুকুর চুরি = (বড় রকমের চুরি) ব্রিজটা ভেঙ্গে পড়বে না কেন , কন্ট্রাক্টর যে পুকুর চুরি করেছে।

পোয়াবারো = (সুসময়) কর্তা বাড়িতে নেই বলে চাকরদের পোয়াবপারো।

পাকা ধানে মই দেওয়া = (বিপুল ক্ষতি করা)  কি দোষ করেছিলাম, তুমি যে আমার পাকা ধানে মই দিলে।

পুঁটি মাছের প্রাণ = (ক্ষীণ প্রাণ) পুঁটি মাছের প্রাণ নিয়ে সৈন্যদলে না যাওয়াই ভালো।

ফাঁপিয়া ওঠা = (ধনী হওয়া)  চোরাকারবারী করে যুদ্ধের সময়ে অনেকে ফেঁপে ওঠেছে।

ফোড়ন দেওয়া বা কাটা = ( খোঁচা দেওয়া)  বিয়ের আসরে করিম বারবার একটি মেয়েকে ফোড়ন দিচ্ছেল।

ফাঁদে পা দেওয়া = (ষড়যন্ত্রে পড়া)  দুষ্টু লোকের মিষ্টি কথায় সে এখন ফাঁদে পা দিয়েছে।

বালির বাঁধ = (ক্ষণস্থায়ী )‘বড়র পিরীতি বাঁলির বাধ, ক্ষণে হাতে দড়ি ক্ষণে চাঁদ।’

বকধার্মিক / বিড়াল তপস্বী = (ভন্ড)  ব্যবহারে তাকে সাধু মনে হলেও আসলে সে একজন বকধার্মিক / বিড়াল তপস্বী।

বাড়া ভাতে ছাই = (আশা ভঙ্গ)  চাকরির আশ্বাস দিয়ে আকরাম সাহেব চাকরি দিলেন না, এ যেন বাড়া ভাতে ছাই

বা হাতের ব্যাপার  = (ঘুষ) অফিস-আদালতে বা হাতের ব্যাপার ছাড়া কোনো কাজই হয় না।

বাঘের দুধ = (দুষ্প্রাপ্য ) বস্তু কথায় বলে টাকা হলে বাঘের দুধও মেলে।

বুকের পাটা = (সাহস)  ছেলেটার বুকের পাটা আছে বৈকি, হইজাকারটাকে হাতে নাতে ধরে ফেলেছে।

বুদ্ধির ঢেঁকি=  (বোকা)  তোমার মতো বুদ্ধির দিয়ে ঢেঁকি দিয়ে আমার কোনই উপকার হবে না।

ব্যাঙের আধুলি = (অতি সামান্য ধন)  তোমার এ ব্যাঙের আধুলিতে আমার কোনই উপকার হবে না।

ব্যাঙের সর্দি = (অসম্ভব)  জেল খাটা দাগীকে দেখাচ্ছে পুলিশের ভয়, ব্যাঙের আবার সর্দি।

বিসমিল্লায় গলদ =  (গোড়ায় গলদ ) অঙ্কের ফল মিলবে কী, বিসমিল্লায় গলদ রয়েছে।

বিনা মেঘে বজ্রাঘাত = (আকস্মিক দুঃসংবাদ)  পুত্রের মৃত্যু সংবাদ তার কাছে বিনা মেঘে বজ্রাঘাতের মতো মনে হলো।

বাঘের মাসী = (নির্ভীক)  বাঘের মাসীর মতো সত্য কথা বলবে এতে ভয় কিসের।

দ,ধ,ন’ সিরিয়াল

দা- কুমড়া সম্বন্ধ =(শত্রুভাব) জমি নিয়ে রহিম ও করিম দু’ভাইয়ের মধ্যে দা-কুমড়া সম্বন্ধ।

দুধের মাছি = (সুসময়ের বন্ধু)  টাকা থাকলে দুধের মাছির অভাব হয় না।

দু’মুখো সাপ = (যে দু’রকম কথা বলে)  তাকে আমার চিনতে বাকি নেই, সে একজন দু’মুখো সাপ।

দু’কান কাটা = (নির্লজ্জ)  দু’কান কাটা লোকেরা সব কিছুই করতে পারে।

দু’টানায় পড়া = (উভয় সঙ্কট)  ঘনিষ্ঠ দু’বন্ধু একই পদে নির্বাচন করছে। কাকে যে ভোট দেব, ভারি দু’টানায় পড়েছি।

দর কষাকষি = (দামাদামি করা)  রহিম মিয়া দর কষাকষিতে ওস্তাদ।

ধামাধরা = (চাটুকারিতা)  ধামাধরা লোকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে।

ধরাকে সরা জ্ঞান করা = (তুচ্ছ জ্ঞান)  টাকার গর্বে অনেকেই ধরাকে সরা জ্ঞান করে।

ধরি মাছ না ছুঁই পানি = (কৌশলে কাজ উদ্ধার করা) তোমার ধরি মাছ না ছুঁই পানি - এই রীতি আমি পছন্দ করি না।

ননীর পুতুল = (শ্রমবিমুখ / অপদার্থ)  তুমি দেখছি ননীর পুতুল, সামান্য পরিশ্রমেই একেবারে গলে যাচ্ছ।

নয় ছয় = (বিশৃঙ্খলা) সারা ঘরে জিনিস পত্রগুলো এমন নয় ছয় করে রেখেছো কেন?

নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো = (নিশ্চিত থাকা)  ঘরে চাল-ডাল নেই আর তুমি দেখছি নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছ।

ত,থ’ সিরিয়াল

তালকানা = (কান্ডজ্ঞানহীন)  তালকানা লোকের ওপর কাজের দায়িত্ব দিয়ে শান্তি নেই।

তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠা = (অতিশয় ক্রুদ্ধ হওয়া)  পাওনা টাকা চাইতেই তিনি তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠলেন।

তাসের ঘর = (ক্ষণস্থায়ী) সামান্য ভুলের জন্য তার সাজানো সংসার তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে গেল।

তিলকে তাল করা = (অতিরঞ্জিত করা)  যা দেখেছ তাই বল, তিলকে তাল করা ঠিক হবে না।

তুষের আগুন = (নিরন্থর দগ্ধকারী)  দুঃখ মাতৃ বিয়োগে সন্তানের বুকে তুষের আগুন জ্বলছে।

তামার বিষ = (অর্থের কু-প্রভাব) বিদেশি পয়সায় রহিজুদ্দিনকে তামার বিষ ধরেছে, মানুষকে মানুষ জ্ঞান করে না।

তুলসী বনের বাঘ = (ভন্ড) করিমকে দেখতে সাধুর মনে হলে কি হবে, আসলে সে তুলসি বনের বাঘ।

তেলা মাথায় তেল দেওয়া = (যার আছে তাকে আরও দেওয়া) সবাই তেলা মাথায় তেল দেয় - গরিবকে কেউ দেখে না।

থ মেরে যাওয়া = (কিংকর্তব্যবিমূঢ় হওয়া)  ছেলের হাতে মদের বোতল দেখে আমি থ মেরে গেলাম।

থই থই করা = (পরিপূর্ণ হয়ে থাকা) ক্রমাগত বৃষ্টিতে নদী থৈ থৈ করছে।

ড,ঢ’ সিরিয়াল

ডুমুরের ফুল=  (অদৃশ্য বস্তু) চাকরি পেয়ে ডুমুরের ফুল হয়ে ওঠলে যে -দেখাই যায় না।

ডান হাতের ব্যাপার = (আহার) একটু অপেক্ষা কর ডান হাতের ব্যাপারটা সেরে আসি।

ডুবে ডুবে জল খাওয়া = (গোপনে কাজ করা)  লোকটা বাইরে সাদাসিধে হলেও আসলে ডুবে ডুবে জল খায়। মস্ত বড় চোরাকারবারি।

ঢাক ঢাক গুড়গুড় = (কপটতা ) ঢাক ঢাক গুড়গুড় করে আর কত দিন চলবে এবার সুপথে আস।

ঢাকের কাঠি = (তোষামোদে)  মন্ত্রী সাহেবের ঢাকের কাঠি হয়ে মনির শেষ গুছিয়ে নিচ্ছে।

ঢাক পিটানো = (প্রচার করা ) সাবধান! রহিমের কাছে কোনো গোপন কথা বলো না বাইরে গিয়ে ঢাক পিটাবে।

ট,ঠ’ সিরিয়াল

টনক নড়া = (সজাগ হওয়া) ছেলে পরীক্ষায় ফেল করাতে করিম সাহেবের টনক নড়ল।

টাকার গরম = (ধনের অহঙ্কার)  টাকার গরমে ফোরকান আলী মাটিতে পা ফেলেন না।

টাকার কুমির = (ধনী)  সুজন বেপারী টাকার কুমির বটে কিন্তু দানের বেলায় খুবই কৃপণ।

টইটুম্বুর = (ভরপুর)  তিন ছেলেই বিদেশে, মতিন সাহেবের সংসার এখন টইটুম্বুর।

ঠোঁট কাটা = (স্পষ্টভাষী) রহিমের মুখে কিছুই আটকায় না, সে একেবারে ঠোঁট কাটা।

ঠাঁট বজায় রাখা = (চাল ঠিক রাখা) স্বল্প আয়ে ঠাঁট বজায় রাখা কঠিন।

ছ,জ,ঝ’ সিরিয়াল

ছ’কড়া ন’কড়া = (সস্তা)  আমদানি বেশি হওয়ায় বাজারে আজ ইলিশ মাছ ছ’কড়া ন’কড়া দরে বিকোচ্ছে।

ছিনিমিনি খেলা = (অপচয় করা) বাজে ছেলের হাতে টাকা দিলে সে তো ছিনিমিনি খেলবেই।

ছেলের হাতের মোয়া = (সহজলভ্য) আজ-কাল চাকরি আর ছেলের হাতের মোয়া নয় যে চাইলেই পাবে।

জিলাপির প্যাঁচ = (কুটিল বুদ্ধি) পেটে যে তোমার এত জিলাপির প্যাঁচ তা কে জানত?

জগাখিচুড়ি পাকানো = (বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ) এমন সহজ অঙ্কটা করতে গিয়ে জগাখিচুড়ি পাকলে কেন?

ঝোপ বুঝে কোপ মারা = (সুযোগ বুঝে কাজ হাসিল করা)  আতিক সাহেব ঝোপ বুঝে কোপ মেরে একদিনেই কাজ সেরে নিলেন।

ঝাঁকের কই = (এক দলের লোক)  করিম হলো ঝাঁকের কই তাকে ধরলেই দলের সবাই ধরা পরবে।

ঝাল ঝড়া = (রাগ মেটানো)  বউয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে এসে সুমন সাহেব অফিসের পিয়নদের ওপর ঝাল ঝাড়লেন।

চ’ সিরিয়াল

চাঁদের হাট = (সুখের সংসার)  সবাই কে নিয়ে নীরব সাহেবের সংসার যেন চাঁদের হাট

চোখের বালি = (অপ্রিয়, চক্ষুশূল)  বখাটে ছেলেরা সকলের চোখের বালি হয়।

চোখের পর্দা = (লজ্জা)  তোমার চোখের পর্দা নেই বলে এমন কাজটি করতে পারলে।

চোখে ধুলি দেওয়া = (ঠকানো বা প্রতারণা করা)  মালিকের চোখে ধুলি দিয়ে কর্মচারীটা অনেক টাকা কামিয়ে নিল।

চিনির বলদ = (ফলভোগী)  নয় দশ বছরে এক টাকাও বেতন বাড়ে নি, অথচ চিনির বলদের মতো খেটেই চলছি।

চোখে সরিষার ফুল দেখা = (বিপদে দিশেহারা হওয়া)  বাবার মৃত্যুতে নীরব চোখে সরষে ফুল দেখছে।

চোখের মণি = (প্রিয়) নীরব তার মা বাবার চোখের মণি।

চশমখোর = (নির্লজ্জ)  ছেলেটি একটি চশমখোর।

চোরাবালি = (অদৃশ্য) বিপদ বিপদের সময় চিন্তা ভাবনা করে না চললে চোরাবালিতে তলিয়ে যেতে হবে।

খ,গ,ঘ’ সিরিয়াল

খয়ের খাঁ = (তোষামোদকারী)  তুমি তো বড় সাহেবের খয়ের খাঁ; তোমার তো প্রমোশন হবেই।

খন্ড প্রলয় = (তুমুল কান্ড) সামান্য ব্যাপার নিয়ে দু’প্রতিবেশিতে খন্ড প্রলয় হয়ে গেল।

খাল কেটে কুমির আনা = (বিপদ ডেকে আনা) ব্যবসায় তাকে অংশীদার করে খাল কেটে কুমির এনেছি।

গড্ডালিকা প্রবাহ = (অন্ধ অনুকরণ) গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে চললে জীবনে উন্নতি করা যায় না।

গণেশ উল্টানো = (তুলিয়া দেওয়া)  এক বছর পার না হতেই শহীদ মিঞার পাটের ব্যবসায় গণেশ উল্টালো।

গলগ্রহ = (অকারণে পরের বোঝা হয়ে থাকা)  অল্প দিনেই নীরব বুঝতে পারল যে, সে তার মামীর গলগ্রহ হয়ে আছে।

গোবর গণেশ = (মূর্খ ) ছেলেটি একটি গোবর গণেশ

গোঁফ খেজুরে = (অলস)  গোঁফ খেজুরে লোকের পক্ষে জীবনে উন্নতি সম্ভব নয়।

গোড়ায় গলদ = (শুরুতেই ভুল)  এ অঙ্ক কিছুতেই মিলবে না, করণ গোড়াতেই গলদ রয়েছে।

গুঁড়ে বালি = (আশায় নৈরাশ্য) আশা করেছিলাম বিদেশে যাব, এখন দেখছি গুঁড়ে বালি।

গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল = (ফলপ্রাপ্তির পূর্বেই ভোগের আশা)  চাকরি পাবার আগেই খরচের হিসাব, এ যে দেখছি গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল।

গভীর জলের মাছ = (চালাক)  নীরব অনেক গভীর জলের মাছ, তার সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিন।

গোবরে পদ্মফুল = (অস্থানে ভালো জিনিস) গরিবের ঘরে ধনবান ছেলে, এ দেখছি গোবরে পদ্মফুল।

গোল্লায় যাওয়া = (নষ্ট হওয়া) সঙ্গ দোষে অনেক ছেলে মেয়েই গোল্লায় যাচ্ছে।

ঘোড়ারোগ = (মাত্রাতিরেক) পেটে ভাত জুটে না আবার মোটর সাইকেল কিনবে, একেই বলে ঘোড়ারোগ।

ঘোড়ার ডিম = (অবাস্তব বস্তু)  পড়াশুনা না করলে পরীক্ষায় ঘোড়ার ডিম পাবে।

ঘাটের মরা = (অতিবৃদ্ধ)  টাকার লোভে জমির আলী মেয়েটিকে ঘাটের মরার হাতে তুলে দিল।

ক’ সিরিয়াল

কলুর বলদ = (এক টানা খাটুনি) কলুর বলদের মত সংসারের পেছনে সারাজীবন খাটলাম কিন্তু লাভের বেলায় কিছুই পেলাম না। ।

কপাল ফেরা = (অবস্থা ভালো হওয়া) লটারিতে পাঁচ লক্ষ টাকা পেয়ে নীরবের কপাল ফিরেছে।

কড়ায় গন্ডায় = (পুরোপুরি) হিসেব কড়ায় গন্ডায় আমার পাওনা বুঝিয়ে দিন।

কান খাড়া করা = (সতর্ক হওয়া)  পাতার র্মর্ম শব্দে শিকারী কান খাড়া করলেন।

কূপমন্ডূক = (সীমাবদ্ধ জ্ঞান) কূপন্ডূক লোক হয়েছে স্কুলের সভাপতি, শিক্ষার উন্নয়ন কী করে সম্ভব?

কেতাদুরস্ত = (বাইরে পরিপাটি) বিদ্বান না হলেও লোকটি পোশাকে-আশাকে কেতাদুরস্ত।

কথায় চিড়া ভিজা বিনা = (ব্যয়ে কার্য সাধনের চেষ্টা) কেবল কথায় চিড়া ভিজে না, কাজটার জন্য নগদ কিছু ব্যয় কর। কান পাতলা = (যে সবকথাই বিশ্বাস করে)  নীরব একটি কান পাতলা ছেলে, যে যা বলে তা-ই বিশ্বাস করে।

কুল কাঠের = (অঙ্গার তীব্রজ্বালা)  ছেলের অকাল মৃত্যুতে বৃদ্ধ মা-বাবার অন্থরে কুল কাঠের অঙ্গার জ্বলছে।

কৈ মাছের প্রাণ = (যে সহজে মরে না)  চোরটার কৈ মাছের প্রাণ, না হলে এত মার খেয়েও বেঁচে গেল।

কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা = (শত্রু দ্বারা শত্রুনাশ) রহিম করিমের বিরুদ্ধে তার ভাইকে লাগিয়ে দিয়ে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে চেয়েছিল।

কেউকেটা = (সমান্য, নগন্য লোক)  নীরবকে কেউকেটা ভেবে ওর সঙ্গে লাগতে যেয়ো না, শেষে বিপদে পড়বে।

কাঠের পুতুল = (নির্বাক, আসর)  মীরজাফর যুদ্ধ না করে কাঠের পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে রইলেন।

কেঁচো খুঁড়তে সাপ = (সামান্য থেকে গুরুতর ব্যপার)  চোরের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসে নিজেই চোর সাব্যস্ত হলো, এ দেখছি কেঁচো খুঁরতে সাপ।

কেঁচে গন্ডুষ করা = (পুনরায় আরম্ব) এক মাসের অনভ্যাসে সব অঙ্ক ভুলে গেছি আবার কেঁচে গন্ডুষ করতে হবে।

কাঁচা পয়সা = (নগদ, প্রচুর উপার্জন)  জাপান গিয়ে নীরব প্রচুর কাঁচা পয়সা উপার্জন করেছে।

কথার কথা = (গুরুত্বহীন কথা)  তোমাকে আঘাত দেওয়ার জন্য এ কথা বলি নি, এটা একটা কথার কথা।

এ,ও’ সিরিয়াল

এক মাঘে শীত যায় না = (বিপদ একবারে শেষ হয় না)  আমার সঙ্গে বাট পাড়ি, মনে রেখো এক মাঘে শীত যায় না।

এক চোখা =(পক্ষপাতিত্ব করা) বড় সাহেবের এক চোখা দৃষ্টিতে অফিসের অনেকেই অসন্থষ্ট।

একাদশে বৃহস্পতি = (সৌভাগ্যের বিষয়)  জনাব নীরব সাহেবের এক ছেলে ডাক্তার, এক ছেলে ইঞ্জিনিয়ার- এখন তাঁর একাদশে বৃহস্পতি।

এলাহি কান্ড = (বিরাট ব্যাপার) সুরভীর বিয়েতে এত বড় আয়োজন এ দেখছি এলাহি কান্ড।

এসপার ওসপার = (মীমাংসা)  চুপ করে বসে থেকে সময় নষ্ট করো না। এসপার ওসপার একটা করে ফেল।

এলোপাতাড়ি =  (বিশৃঙ্খলা) এলোপাতাড়ি কথা না বলে বিষয়টা যৌক্তিক ভাবে দেখার চেষ্টা কর।

ওজন বুঝে চলা  = (আত্মসম্মান বজায় রাখা) সবারই ওজন বুজে চলা উচিত, নয় তো পদে পদে বিপদ।

ই, ঈ, উ, ঊ’ সিরিয়াল

ইঁদুর কপালে = (মন্দ ভাগ্য) = নীরব ইঁদুর কপালে তাই তো চাকরিটা হয়েও হলো না।

ইঁচড়ে পাকা = (অকাল পক্ব) ছেলেটা ইঁচড়ে পাকা তাই সে বড়দের সাথে তর্ক করে।

ইতরবিশেষ  = (ভেদাভেদ)  আল্লাহর কাছে সবাই সমান, কোনো ইতরবিশেষ নেই।

ঈদের চাঁদ = (অতি আকাঙ্খিত বস্তু)  সাত বছর পর ছেলে বাড়ি ফেরছে, মা যেন ঈদের চাঁদ দেখলেন।

উত্তম-মধ্যম = (প্রহার) পকেটমারটাকে জনতা উত্তম-মধ্যম দিয়ে বিদায় করলো।

উলুবনে মক্তা ছড়ানো = (অস্থানে মূল্যাবান জিনিস দান)  মূর্খকে ভালো উপদেশ দেওয়া আর উলুবনে মুক্তা ছড়ানো একই কথা।

উভয় সংকট = (দুই দিকের বিপদ)  আমার হয়েছে উভয় সংকট।

আ’ সিরিয়াল

আদায় কাঁচকলায় = (ঘোর শত্রুতা)  নীরবকে এ ব্যাপরে আমি কিছুই বলতে পারবো না ওর সঙ্গে আমার আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক।

আক্কেল সেলামী = (বোকামির দন্ড)  বিনা টিকিটে ট্রেনে চড়ে নোমানকে পঞ্চাশ টাকা আক্কেল সেলামী দিতে হলো।

আকাশ কুসুম = (অসম্ভব কল্পনা) মঙ্গল গ্রহে অভিযান এখন আর আকাশ কুসুম কল্পনা নয়।

আক্কেলগুড়ম = (হতবুদ্ধি হওয়া)  ছেলেটির পথে বসার কথা শুনে আমার আক্কেলগুড়–ম।

আষাঢ়ে গল্প = (অবিশ্বাস্য কাহিনী)  এ সব যে তোমার আষাঢ়ে গল্প, তা আমি আগেই বুঝতে পেরেছি।

আলালের ঘরের দুলাল =  (আদুরে অপদার্থ সন্তান)  আদর দিয়ে ছেলেকে আলালের ঘরের দুলাল কলে তুলেছ এখন ফল ভোগ কর।

আমড়া কাঠের ঢেঁকি = (অপদার্থ)  তোমার মতো আমড়া কাঠের ঢেঁকি দিয়ে এ কাজ হবে না।

আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ = (হঠাৎ বড়লোক) লোকটি হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেল।

আকাশে তোলা = (অতিশয় প্রশংসা করা) বড় সাহেবকে আকাশে তুলে করিম সাহেব কাজটি উদ্ধার করে নিলেন।

আকাশ পাতাল = (বিশাল ব্যবধান) ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান থাকে।

আমতা আমতা করা = (ইতস্তত করা, দ্বিধা করা)  আমতা আমতা না করে সত্য ঘটনা খুলে বল।

অ’ সিরিয়াল

অল্পবিদ্যা ভয়ংকারী = (সামান্য বিদ্যার ভয়ংকার, অহেতুক গর্ব করা) তথ্য-প্রযুক্তি সম্পর্কে সে কিছুই জানে না, আবার দেমাক কত, একেই বলে অল্পবিদ্যা ভয়ংকারী।

অক্কা পাওয়া = (মরে যাওয়া)  জনতার পিটুনিতে পকেটমারটা অক্কা পেয়েছে।

অরণ্যে রোদন = (নিষ্ফল আবেদন)  সমিতির জন্যে কৃপণ জব্বার মিয়ার কাছে টাকা চাঁদা চাওয়া অরণ্যে রোদনমাত্র।

অগস্ত্যযাত্রা = (চিরতরে চলে যাওয়া)  চুরি করে নীরব গ্রাম থেকে অগস্ত্য যাত্রা করেছে।

অর্ধচন্দ্র = (গলাধাক্কা দেওয়া)  কথা না শুনলে শয়তানটাকে অর্ধচন্দ্র দিয়ে বিদায় করে দাও।

অন্ধের যষ্ঠি বা অন্ধের নড়ি = (একমাত্র অবলম্বন) বিধবার একমাত্র সন্তান অন্ধের যষ্ঠি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেল।

অগাধ জলের মাছ = (সুচতুর ব্যক্তি/ চালাক লোক)  তাকে দেখতে সরল মনে হলেও আসলে সে অগাধ জলের মাছ।

অন্ধকার দেখা = (হতাশ হওয়া)  পরীক্ষায় ফেল করে জব্বার চোখে অন্ধকার দেখাছে।

অমাবস্যার চাঁদ = (দুর্লভ বস্তু)  চাকরি পেয়ে যেন নীরব অমাবস্যার চাঁদ হয়ে পড়েছে।

অকূল পাথার = (ভীষণ বিপদ)  অকূল পাথরে মহান আল্লাহ একমাত্র সহায়।

অনুরোধে ঢেঁকি গেলা = (অসম্ভব কাজ সম্পন্ন করতে রাজি হওয়া)  অনুরোধে ঢেঁকি গেলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়, আমি এ কাজ করতে পারব না।

অগ্নিশর্মা = (ভীষন রেগে যাওয়া)  নীরব পড়া না পড়ায় হেড স্যার অগ্নিশর্মা হলেন।

অদৃষ্টের পরিহাস = (ভাগ্যের নিষ্ঠুরতা)  অদৃষ্টের পরিহাসে বাদশাও ফকির হয়।  

সমার্থক শব্দ/প্রতিশব্দ
Previus
বাক্য সংকোচন (এক কথায় প্রকাশ)
Next

Share This Post


Suggestion or Complain

সংবাদ শিরোনাম